5169
Loading ...
শনি. আগ ১৬, ২০২৫
হত্যাকান্ডে ব্যাবহৃত আলামত | ছবি: BD TIMES NEWS 24

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে ঘটেছে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। পারিবারিক কলহ ও ক্ষোভের জেরে বড় ভাই আব্দুর রহিম রাফি (২৬)-কে ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়ে হত্যা করেছে তারই ছোট ভাই রানা (ছদ্মনাম, বয়স ১৬)। পুলিশ অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেফতার করেছে এবং হত্যায় ব্যবহৃত দা ও রক্তমাখা লুঙ্গি উদ্ধার করেছে।

গত ৯ আগস্ট সকালে নিজ ঘরে রাফির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান এবং কমলগঞ্জ থানার ওসি আবু আফর মোঃ মাহফুজুল কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সন্দেহজনক আচরণ ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সেদিনই নিহতের ছোট ভাই রানাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। এক পর্যায়ে সে হত্যার কথা স্বীকার করে।

রানা জানায়, ঘটনার আগের দিন রাতে সে বড় ভাইয়ের কাছে ৫০০ টাকা চাইলে রাফি টাকা না দিয়ে গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন সকাল ৭টার দিকে মা ও ভাবি বাড়িতে না থাকার সুযোগে ঘুমন্ত ভাইকে খাটের নিচ থেকে বের করা ধারালো দা দিয়ে ঘাড়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর দা ধুয়ে আবার খাটের নিচে রেখে দেয় এবং নিজের রক্তমাখা লুঙ্গিও সেখানে ফেলে রাখে। পরে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে।

পুলিশ জানায়, হত্যার পেছনে শুধু টাকার ঘটনা নয়, দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধও দায়ী। নিহত রাফি ছোট ভাইকে মাদ্রাসায় রেখে পড়াতে চাইলেও রানা পড়াশোনায় উদাসীন ছিল এবং প্রায়ই বাড়িতে থাকত। এ নিয়ে বড় ভাই তাকে শাসন করতেন। এছাড়া রাফি পরিবারের অমতে প্রেম করে বিয়ে করেন, যা মা ও ভাই মেনে নিতে পারেননি। বিয়ের পর থেকে দেবর-ভাবী এবং ভাইয়ের মধ্যে প্রায়ই অশান্তি চলত। এসব কারণে ছোট ভাইয়ের মনে বড় ভাইয়ের প্রতি ক্ষোভ জমে যায়, যা শেষ পর্যন্ত হত্যার মাধ্যমে বিস্ফোরিত হয়।

নিহতের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা (নং-০৫, তারিখ-১০/০৮/২০২৫, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড) দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মামলার তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *